কেন নামাজ পড়বেন? ইসলামে নামাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং ব্যক্তির ঈমান, শান্তি, মানসিক ও শারীরিক সমস্যাদি সমাধান করায় সাহায্য করে।
কেন নামাজ পড়বেন? লেখক বইটিতে 33টি ছোট ছোট অধ্যায়ের মাধ্যমে কুরআন হাদিসের আলোকে এবং তার ব্যক্তিজীবনে নামাজ যেভাবে তাকে প্রশান্তি দিয়েছে সেই বাস্তব ভিত্তিক অভিজ্ঞতা তিনি অত্যন্ত নিপুনভাবে উপস্থাপন করেছেন।
ইসলামেপ পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে ঈমানের পড়েই নামাজের স্থান। নামাজ হলো আল্লাহ তায়ালার সামনে দন্ডায়মান হওয়া ও তার ডাকে সাড়া দেওয়া। পবিত্র কোরআনে 82 জায়গায় 82 বার আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ করেন “তোমরা নামাজ কায়েম করো”।
নামাজের বিষয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “মুমিন আর কাফেরদের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ। মুসলমান নামাজ পড়ে আর কাফেররা নামাজ পড়ে না”। “হাসরের মাঠে নামাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেয়া হবে”। “নিশ্চয়ই নামাজ কুপথ ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে”।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় নামাজ সব অশ্লীল ও পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সূরা আনকাবুত, আয়াত-৪৫)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রসুল (সা.)কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আমল আল্লাহতায়ালার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়? রসুল (সা.) বললেন, ‘নামাজ’। (বুখারি শরিফ, হাদিস নং-৫২৬)
কেন নামাজ পড়বেন রিভিউ
কেন নামাজ পড়বেন? একজন প্রকৃত মুমিনের অজানা নয়। কিন্তু একজন বে-নামাজির বা অনিয়মিত নামাজির জন্য জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত নামাজের মধ্যে কত যে ফজিলত কত শান্তি তা একমাত্র নামাজিরাই জানে। এ বইয়ের লেখক মুহাম্মদ নূরুল্লাহ সাঈদী একজন প্রকৃত মুমিন এবং নামাজি। তিনি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই নামাজ পড়েন। প্রকৃতপক্ষে তিনি উপলব্ধি করেন নামাজ পার্থিব দুনিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ প্রতিটি মুহুর্তে মুর্তমান। আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি এত সুন্দর, বৈচিত্রময়, কোমল, মনোরম এত প্রশান্তি যা প্রকৃত মুমিনরা উপভোগ করতে পারে আর আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে পারে।
লেখক কেন নামাজ পড়বেন বইটিতে ছোট ছোট অধ্যায়ের মাধ্যমে নামাজ পড়ার প্রয়োজনীয়তা ও ফযিলত নিয়ে আলোকপাত করেছেন। নামাজ সঠিকভাবে পড়লে নামাজ অবশ্যই তাকে অশ্লীল ও পাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে। নামাজ পড়ার কারনে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে যেভাবে পুরস্কৃত করবেন কোরআনের আলোকে লেখক উল্লেখ করেছেন। লেখক তার দীর্ঘ জীবনে নামাজের কারনে যেভাবে পার্থিব জীবনে উপকৃত হয়েছেন তা তিনি এই বইতে ব্যাখ্যা করেছেন।
এখানে বইয়ে উল্লেখিত কিছু অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলোঃ
নামাজ রূহের নাজাত
নামাজরে মাধ্যমে বান্দার রূহ কার্যকর ও শক্তিশালী হয়। মানুষ মাটি দ্বারা তৈরি এবং মানুষের প্রয়োজনীয় খাবারও মাটি থেকে তৈরি আবার তা মাটিতে মিশে যায়। কিন্তু রূহ আল্লাহ তায়ালা নিজে দান করেছেন যার পরিচর্যা নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ও আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে করতে হয়। এর ব্যতিক্রম হলে রূহ শয়তানের বন্দনা করে বিপদগামী হয়, হতাশা ভর করে, অশান্তি আসে আর সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।
আল্লাহর নৈকট্য লাভ
আল্লাহর নৈকট্য লাভের যত মাধ্যম তার মধ্যে নামাজ অন্যতম। আমরা যদি আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চাই তাহলে আমাদেরকে নীরবে একনিষ্ঠ হয়ে তার কাছে কান্নাকাটি করে আমাদের পাপসমূহের ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহপাক ক্ষমাশীল, তিনি চাইলে আমাদের ক্ষমা করতে পারেন, আমাদের কাজ হচ্ছে ক্ষমা চাইতে থাকা আর দোয়া করতে থাকা। দোয়া করার উত্তম একটি সময় হল গভীর রাত অর্থাৎ তাহাজ্জদের সময়।
হাদিসে এসেছে, হজরত বেলাল (রা.) বর্ণনা করেছেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তাহাজ্জদ নামাজ তোমাদের নিয়মিতভাবে পড়া উচিত, কেননা এটা অতীতকালের সৎকর্মশীলদের পদ্ধতি ছিল এবং স্রষ্টার নৈকট্য লাভের মাধ্যম ছিল। এই অভ্যাস পাপকর্ম থেকে বিরত রাখে, মন্দকর্ম দূর করে আর শারীরিক রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা করে’ (তিরমিযি, আবওয়াবুদ দাওয়াত)।
শারীরিক ব্যায়াম ও দারিদ্রতা দূর করনে নামাজ
লেখক তার দীর্ঘ জীবনে এটুকু বুঝেছেন যে নামাজ শুধু ইবাদাতই নয়, এটা শারীরিক ব্যায়ামও বটে। নামাজ রূহের নাজাতের পাশাপাশি শরীরকে করে সতেজ। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় শারীরিক ও আত্মিক দিক উন্নত হয় আর যাকাত ব্যবস্থায় সমাজ থেকে দারিদ্রতা দূর হয়। তাছাড়া নামাজের মাধ্যম মানুষ ঐক্য ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়।
নামাজ পড়াটি ইসলামিক ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে একটি। ইসলামে নামায পড়াটি ব্যক্তির ঈমান এবং দরকারি সামাজিক আদর্শ উন্নয়ন করতে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কেবলমাত্র নামাজ পড়া ইসলামের বিশেষ সূচক নয়, তবে এটি ব্যক্তির স্বাস্থ্য, মানসিক ও শারীরিক সমস্যাদি সমাধান করায় সাহায্য করে এবং শান্তি ও সমগ্র উন্নয়নে সাহায্য করে।
কেন নামাজ পড়বেন? নামাজের গুরুত্ব ও ফযিলত পূর্ব থেকে জানলেও এই বইতে আরো বিশেষ কিছু খুঁজে পাবেন যা আপনার ঈমানকে আরো মজবুত এবং নামাজের মহিমা এবং নামাজের দিকে ঝুঁকে পড়তে সহায়তা করবে। বইটি একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই পড়া উচিত এবং পড়লে উপকৃত হবেন।
বইয়ের নাম: কেন নামাজ পড়বেন
লেখক: মুহাম্মদ নূরুল্লাহ সাঈদী
প্রকাশনী: প্রীতি প্রকাশন
পৃষ্ঠা: 64
এই বইয়ের লেখকের স্ব-রচিত কবিতা লক্ষ্য পড়ুন
লেখক পরিচিতি:
মুহাম্মদ নূরুল্লাহ সাঈদী 1970 সালে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া দ্বীপের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি সৌদি আরব ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মক্কা আল মোকররমায় জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এর ঢাকার বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। 1999-2001 পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। 2001 সালের 15 নভেম্বর প্রবেশনারী অফিসার হিসাবে ইসলামী ব্যাংকে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি ফার্ষ্ট এ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে রমনা শাখায় কর্মরত আছেন।