September 28, 2023
Book Review

ক্লিওপেট্রা রিভিউ- ঘুরে আসুন প্রাচীন মিশর

cleopetra-review-henry-rider-hagard

ক্লিওপেট্রা রিভিউ: ক্লিওপেট্রা হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড এর রোমাঞ্চকর ঐতিহাসিক উপন্যাস ।

বইয়ের নাম : ক্লিওপেট্টা
লেখক: হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড
রূপান্তর: সায়েম সোলায়মান
পৃষ্ঠা: 246

হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড তার ‘ক্লিওপেট্রা’ বইতে ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন এভাবে-

ক্লিওপেট্রার মুখটা না গোলাকার, না লম্বাটে, বরং দুটোর মাঝামাঝি। ঠোঁট দুটো গোলাপের পাঁপড়ির মতো- টকটকে লালও নয়, আবার কিছু কমও নয়। নাকটা সরু, লম্বা; ঠিক যতটুকু হলে অপূর্ব সুন্দর চেহারার সাথে মানানসই হয়। কপালটা ঢালু, চওড়া। ধনুকের মতো বাঁকানো ভ্রু, লম্বা, বাঁকা পাঁপড়িগুলো মায়াময় চোখগুলোকে পাহারা দিচ্ছে সুদক্ষ প্রহরীর মতো। এত নীল সে দু-চোখের মণি, মনে হয় যেন আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল এক হয়েও হারাতে পারবে না সেই গাঢ়ত্বকে

ক্লিওপেট্রা রিভিউ

মিশরের একটা প্রাচীন শহরের নাম অ্যাবাউদিস। শহরটার চারদিকে পর্বতমালা। প্রিয় পাঠক, চলুন, ঘুরে আসি প্রাচীন মিশর থেকে। অ্যাবাউদিসে গল্পের নায়ক হারমাচিসের জন্ম। একই দিনে জন্মাল মিশনের রানী ক্লিওপেট্টা। রোমাঞ্চকর ইতিহাসের সাক্ষী হতে চাইলে বইটি পড়ে ফেলুন । গল্পের মধ্য থেকে খুব ছোট চরিত্র “পোসেডোন” সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু উল্লেখ করা হলো।

উপন্যাসটির একটি বিশেষ চরিত্র পোসেডন:

ডাইনারিটাম নামক মিশরের একটি ছোট দীপে সুন্দর করে সাজানো একটা কুঁড়েঘরে বাস করতো পোসেডোন। লোকটা খুব সৎ আর একেবারে সহজ-সরল। লোকটা সব সময়ই অদ্ভুত ধরণের। কোন জটিলতা নেই ওর জীবনে, কথাবার্তায়, চালচলনে। বিয়ে করেনি সে, আক্ষরিক অর্থেই মেয়েদের উপর কোনরকম আকর্ষণ নেই ওর। যত সুন্দরী হোক না কেন, নারী ওর কাছে সমুদ্রের ঢেউ, তীরের বালি, পাহাড়ের চূড়া কিংবা পাখির ঝাঁকের মতোই বৈচিত্রহীন; গুরুত্বহীন।

দিনের বেলায় মাছ ধরে সে, বিকেলে সেগুলো বিক্রি করে বাজারে। রাতে কখনও তীরে বসে একমনে শোনে সাগরের গান, কখনও ডাইনারিটামের মাথায় বসে গণনা করে আকাশের তারা। সমুদ্রে ঝড় উঠলে ওর মনটা সবার আগে, সবকিছুর আগে সেই ঝড়ের ছোবলে তছনছ হয়ে যায়; তখন নিজের কুটিরে বসে একমনে বাঁশি বাজায় সে। কী অপূর্ব সেই বাঁশির সুর! মনের প্রতিটা ঝোড়ো আবেগকে প্রতিটা ফুঁ আর আঙুলের যাদুময় কারুকাজের মাধ্যমে একেবারে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলে পোসেডোন।

ক্লিওপেট্রা রিভিউ cleopetra review
Photo Credit: Wallpaperca

জীবন ঘষে আগুন – হাসান আজিজুল হক

কত সাধনা, কত জ্ঞানার্জন করে কত সাধক প্রকৃত সাধু হতে পারেনি, পারেনি বিবাগী হতে। কিন্তু পোসেডোন বিনা সাধনায় সাধু; সুখ কি, তা না জেনেই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। দিন আনে দিন খায় সে, বাজারে মাছ বিক্রির সময় অন্য জেলেদের মত মিথ্যা বলে না। অর্থ সম্পদের প্রতি সামন্যতম লোভও নেই ওর। প্রয়োজন না হলে সে একটা কথাও বলে না। তার মতে সময়ের চেয়ে বড় চিকিৎসক আর নেই। মনের ঘা, শরীরের ঘা দুটোই একসময় শুকিয়ে দেয় সে।
‘ক্লিওপেট্রা’, হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড: কাব্য উপন্যাসের নায়ক হারমাচিস ঘটনাচক্রে এই দীপে পোসেডোনের কাছে আশ্রিত ছিল কিছুদিন। হারমাচিস যাবার সময় পোসেডোনকে একটি চিঠি লিখেছিল:

“সমুদ্র থেকে এসেছিলাম আমি, আবার সমুদ্রেই ফিরে যাচ্ছি। এ জীবনে বন্ধু বলে যদি কাউকে পেয়ে থাকি, তবে সেটা তুমি। তোমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমাকে বিদায় বলার মতো সাহস আমার নেই, তাই পালিয়ে যাচ্ছি। যদি কোনদিন সাধক পুরোহিতদের সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য আমার হয়, তা হলে ওদেরকে সাধনা ছেড়ে কোন নির্জন দ্বীপে গিয়ে মাছ ধরতে বলব। বন্ধু, তুমি সব সাধকের গুরু। বন্ধু, বিদায় ।

বইটি রকমারী থেকে কিনতে পারবেন

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x