আন্তর্জাতিক সংগঠন আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠতা ওসামা বিন লাদেন’কে হত্যার অভিযান নিয়ে লেখক ‘নো ইজি ডে’ বইটি লেখেন।
2011 সালের 2মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে মার্কিন নেভি সিলের সদস্যদের কমান্ডো অভিযানে ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। ওই অভিযান নিয়ে ‘নো ইজি ডে’ নামে বই লেখেন অভিযানে অংশ নেয়া নেভি সিলের সদস্য ম্যাট বিসোনেট। লেখক হিসেবে তিনি ছদ্ম নাম ‘মার্ক ওয়েন’ ব্যবহার করেন। ওসামা বিন লাদেনের কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নিয়েছেন লেখক।
নো ইজি ডে নিয়ে মন্তব্যঃ
“বিন লাদেনের কিলিং মিশনই ‘নো ইজি ডে’ বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য কিন্তু লেখক যেভাবে এর কাহিনি এগিয়ে নিয়ে গেছেন সেটা অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর…আগের সব ঘটনা ভুল প্রমান করে দিয়ে লাদেন অভিযানের সত্যিকারের বর্ণনা পাওয়া যাবে এই বইতে.. নিঃসন্দেহে উপভোগ করার মতো একটি বই। ” – নিউইয়র্ক টাইমস
“অ্যাবোটাবাদের ঐতিহাসিক অভিযানের টান টান উত্তেজনার একটি বই .. পাঠক থৃলার উপন্যাস পড়ার স্বাদ পাবে.. কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি একটি সত্যি ঘটনারই সহজ সরল প্রকাশ।” – এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি
“বইটি না পড়ে ভুল করবেন না, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল। মার্ক বাউডেনের ব্ল্যাকহক ডাউন-এর পর এরকম বই আর প্রকাশিত হয় নি।”
-লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস
“সাহসী, বুদ্ধিদীপ্ত এবং মিলিটারি ইতিহাসে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি বই।” – পিপল ম্যাগাজিন
“সাবলীল গতি আর সত্যিকারের ওয়ারফেয়ারের তথ্যসমৃদ্ধ একটি বই.. মার্ক ওয়েন আর কেভিন মোরার প্রশংসার দাবি রাখে।” – ওয়াশিংটন পোষ্ট
“যারা ওসামা বিন লাদেনের হত্যা মিশন সম্পর্কে জানতে বইটি পড়বেন তাদের জন্য বাড়তি কিছু রয়েছে এই বইটিতে.. অসংখ্য মিলিটারি অপারেশন আর ট্রেইনিংয়ের ডিটেইল সমৃদ্ধ…”। – মার্ক বাউডেন, ব্ল্যাকহক ডাউন বইয়ের লেখক
প্রশিক্ষিত একদল মার্কিন কমান্ডো বাহিনীর এক দুর্দান্ত অভিযান যা কল্পকাহিনি থেকেও রোমাঞ্চকর। – এমএইচ মাসুদ, গহীনে দোলা’র প্রতিষ্ঠাতা এবং নিয়মিত পাঠক ও রিভিউয়ার
বাংলাদেশের 5টি বিখ্যাত নন-ফিকশন বই
নো ইজি ডে রিভিউ
পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরে সর্বাধুনিক সমর প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত মার্কিন কমান্ডো বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে ওসামা বিন লাদেনের সাময়িক অবস্থানের বাড়িতে। অভিযানে অংশ নেয় মার্কিন 24জন কমান্ডো, বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালনাকারী অফিসার ও সিআইএর লোকজন সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। উপরে চক্কর খাচ্ছে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন), সেখান থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছে অভিযানের ভিডিওচিত্র।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বসে বারাক ওবামা, হিলারী ক্লিনটনসহ পেন্টাগন-সিআইএর কর্মকর্তারা অভিযান পর্যবেক্ষন করছে। লাদেনের হত্যার খবর শোনার জন্য তারা উদগ্রীব হয়ে আছে।
লাদেনের নিথর দেহ
ইতোমধ্যে লাদেনের দেহ নিথর হয়ে গেছে। বুলেটের আঘাতে চুরমার হয়ে গেছে লোকটির মুখমণ্ডল। কপালের ডান পাশে একটি গর্ত, মাথার ডান অংশটি উড়ে গেছে। ঝাঁঝড়া হয়ে গেছে বুক। নিথর দেহ পড়ে আছে, রক্তের ধারা বয়ে চলেছে তার চারপাশে, রক্তে ডুবে যাচ্ছে তার লাশ।
নিহত লাদেনকে চিহ্নিতকরন
লাদেনের সাথে তার পঞ্চম স্ত্রী ও তাদের তিন শিশু সন্তান ছিল। শিশুগুলো গ্রেনেডের আঘাত ও ঘটে যাওয়া ঘটনায় ব্যালকুনিতে যাওয়ার স্লাইডিং কাচের দরজার গোড়ায় নির্বাক হয়ে গুটিসুটি হয়ে বসে আছে। তার স্ত্রী গ্রেনেডের আঘাতের কারনে পায়ের কবজি চেপে ধরে পাগলের মতো চিৎকার করছে।
সিআইএ’র বর্ণনা মতে নিহত লাদেনকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে কমান্ডোরা। লোকটা লম্বা প্রায় ছয় ফুট চার ইঞ্চি। ঠিক আছে, মিলে যাচ্ছে। তিন তলায় পুরুষ লোক থাকার কথা মাত্র একজন, তিনি লাদেন। মিলে যাচ্ছে। নাকটি অক্ষত ছিল, লাদেনের ছবির সাথে ফটো মিলিয়ে দেখলো নাকটি মিলে যাচ্ছে। দাড়ি ঘনকালো, পাকা চুল একটাও চোখে পড়ল না। সম্ভবত দাড়িতে কালো কলপ লাগানো হয়েছিল।
নিহত লাদেনের ছবি প্রকাশ বিষয়
নিহত লাদেনের ছবি আমেরিকা সরকার প্রকাশ করেনি। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটড প্রেস (এপি) ফ্রিডম অব ইনফরমেশন আইন ব্যবহার করে নিহত লাদেনের ছবি প্রকার জন্য জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ছবি প্রকাশের অনুমতি দেননি এই যুক্তি দেখিয়ে যে তার ফলে আমেরিকার প্রতি বিদ্বেষ বেড়ে যাবে। ‘নো ইজি ডে’ বইয়েও মার্ক ওয়েন লাদেনের কোন ছবি প্রকাশ করেননি।
‘নো ইজি ডে’ বই পরিচিত
বইয়ের নাম: নো ইজি ডে
লেখক: ম্যাট বিসোনেট, ছদ্ম নাম: মার্ক ওয়েন
অনুবাদ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও রবিন জামান খান
পৃষ্ঠা সংখ্যা: 223
প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী
প্রথম প্রকাশ: সেপ্টেম্বর, 2022
মূল্য: 220 টাকা।
ওসামা বিন লাদেনের পরিচয়
ওসামা বিন মুহাম্মদ বিন আওয়াদ বিন লাদেন সৌদী আরবে জন্মগ্রহণকারী আল কায়েদা নামের একটি সংগঠন এর আমির ও একইসাথে সংগঠন আল কায়েদা এর প্রতিষ্ঠাতা। সাধারনত তিনি ওসামা বিন লাদেন বা উসামা বিন লাদেন নামে পরিচিত। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেররিকার টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার জন্য বহুলভাবে পরিচিত হয়ে উঠেন। অন্য কয়েকজন আলেমের সাথে মিলে ওসামা বিন লাদেন দুইটি ফতোয়া জারি করেন; একটি ১৯৯৬ সালে, অন্যটি ১৯৯৯ সালে। তার ফতোয়াটি ছিল, ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের উচিত মার্কিন সামরিক ও বেসামরিক জনগণকে হত্যা করা যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতি সব সহায়তা বন্ধ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ সকল মুসলিম দেশ থেকে সামরিক শক্তি অপসারণ করে।