বাংলাদেশ রক্তের ঋণ (Bangladesh: A legacy of blood) সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের লেখা তথ্য উপাত্ত সম্মিলিত একটি দলিল।
1985 সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বইটির মুখবন্ধে, অ্যান্থনি মাসকারেনহাস লিখেছেন: “এটি একটি সত্য ঘটনা; অনেক দিক থেকেই এটি স্থায়ী বিশ্বের মোহমুক্তির এক অনন্য পাঠ্যপুস্তক ।
1971 সালের 16ই ডিসেম্বর নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তি সংগ্রামের পর পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি নূতন রাষ্ট্রের জন্ম হলো। বিনিময়ে দশ লক্ষাধিক বাঙালী পাকিস্তানের সেনাবাহিনির হাতে নৃশংসভাবে নিহত হয়।
বাংলাদেশ রক্তের ঋণ (Bangladesh: A legacy of blood) রিভিউ
বাংলাদেশ রক্তের ঋন বইটিতে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থান ও অভ্যুত্থানের ঘটনাবলি রয়েছে। বইটি বাংলাদেশের রাজনীতির দুই উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহমান এবং জিয়াউর রহমানকে কেন্দ্র করে। তারা জনপ্রিয়ভাবে আধুনিক বাংলাদেশের দুই প্রধান স্থপতি হিসেবে পরিচিত এবং প্রত্যেকের শাসনের অবসান হয়েছিল হত্যার মাধ্যমে।
বাংলাদেশ রক্তের ঋন বইটি বাংলাদেশের প্রথম দিকের নেতাদের সময়ের অবর্ণনীয় গল্প, মূলত বাংলাদেশের প্রথম 10 বছরের দুঃখজনক ইতিহাস। 1971 পরবর্তী থেকে 1981 জিয়াউর রহমান পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। বইটি লেখার আগে লেখক পুরুষ ও মহিলাদের সাথে 120 টিরও বেশি পৃথক সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। অফিসিয়াল আর্কাইভ এবং নথি পরিদর্শনের বিশেষাধিকার লেখকের ছিল।
বইটি একটি আকর্ষক শৈলীতে লেখা হয়েছে, অভ্যুত্থান / হত্যাকাণ্ড এবং ষড়যন্ত্রকারীদের সম্পর্কে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিভাবে শেখ মুজিব নিহত হয়েছিলেন, তাজউদ্দিন এবং অন্য 3 নেতাকে জেলের ভেতরে কারা হত্যা করেছিল এবং কীভাবে জেনারেল জিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল । জিয়াউর রহমানের হত্যার জন্য ফাঁসিতে ঝুলানো অফিসারদের তালিকাও ‘অ্যা লিগ্যাসি অব ব্লাড’-এ রয়েছে।
লেখক পরিচিত:
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিক, স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকেই বাংলাদেশের সাথে যুক্ত । তিনি 1971 সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বারা পরিচালিত নৃশংসতার কথা প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়ে লন্ডনের দি সানডে টাইমস পত্রিকায় তখনকার বাংলাদেশ ভূখন্ডে পাকিস্তানি সেনাবাহিনির নির্মম হত্যার কাহিনি বিশ্ব জনমতের সামনে তুলে ধরেন। তিনি গোয়ায় জন্মগ্রহণ করেন, করাচিতে শিক্ষিত হন এবং বহু বছর ধরে ভারত, পাকিস্তান এবং যুক্তরাজ্যে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি 1986 সালে 58 বছর বয়সে মারা যান।
তিনটি সেনা অভ্যুত্থান ও কিছু না বলা কথা: নির্মম ইতিহাস
বইয়ের নাম: বাংলাদেশ: রক্তের ঋন (Bangladesh: A legacy of blood)
লেখক: অ্যান্থনি মাসকারেনহাস
অনুবাদক: মোহাম্মদ শাহজাহান
প্রকাশক: হাক্কানী পাবলিশার্স
প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারী, 1988
পৃষ্ঠা: 214
মতামত:
এই বইটিতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ফারুক গং দের এমন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যেন তারা বাংলার সূর্যসন্তান।খন্দকার মোশতাক ভাগ্যাহত রাজনীতিবিদ। জিয়া বাংলার ভাগ্যবিধাতা, জিয়া একটি নাম একটি কিংবদন্তি। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ব্যর্থ, পরাজিত রাজনীতিবিদ।
বঙ্গবন্ধু হত্যা, খন্দকার মোশতাক এর অপরাজনীতি, জাতীয় চার নেতা জেল হত্যা, কয়েকটি ব্যার্থ অভ্যুত্থান পালটা অভ্যুত্থান, মেজর জিয়াউর রহমান হত্যা এর নিখুত তথ্য উপাত্ত সাক্ষীর সাক্ষাৎকার নিয়ে বইটি রচিত হলে ইতিহাস নিয়ে রচিত বই হিসেবে আমি বরাবরই মধ্যম শ্রেণির রেটিং দিতেই আগ্রহী । কেননা যতই সঠিক ইতিহাস নিয়ে বই রচিত হয়েছে কোন না কোন বই কিছুটা পক্ষপাতদুষ্টে দুষ্ট বলেই মনে হয়েছে।
‘বাংলাদেশ: রক্তের ঋণ’ বইটি ও এর ব্যাতিক্রম মনে হয়নি। কেন সেটা জানতে হলে অবশ্যই নিজের পড়া উচিত।
বইটির পিডিএফ লিংক
[…] […]