September 28, 2023

গহীনে দোলা’তে উপন্যাস, গল্প  ও প্রবন্ধ রিভিউসহ বিভিন্ন মনীষীদের আত্নজীবনী, সাহিত্যিক পরিচিতি, অনুপ্রেরণামূলক গল্প, পৃথিবী বিখ্যাত সফল ব্যাক্তিত্বদের উদ্ধৃতি, মনীষীদের উক্তি অনুবাদ করে বাংলায় প্রকাশ করা হয়ে থাকে। বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা সবার কাছে যেন পৌছে যায় সেই লক্ষ্যেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একজন পাঠক কেন বই পড়বে, কি ধরনের বই পড়া উচিত, কোন ধরনের বই পড়তে ইচ্ছুক, কোন বই অবশ্যই পড়া উচিত, কোন বই নিজেকে বিকশিত করবে, তা আমাদের নিয়মিত বই পড়ুয়ার স্বল্প দৈর্ঘ্য রিভিউ পড়ে অনায়াসে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।   

পল্লী কবি জসীমউদ্দিন বলেছেন, ‘বই জ্ঞানের প্রতীক, বই আনন্দের প্রতীক।‘ জ্ঞান আর আনন্দ  ছাড়া মানব জীবন নিশ্চল হয়ে পড়ে। জীবনকে সুন্দর ভাবে বিকশিত করতে হলে, সুবাসিত করতে হলে জ্ঞানার্জন করতে হবে। আর জ্ঞানার্জন করতে হলে বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। পৃথিবীর যাবতীয় জ্ঞানের কথা যেন বইয়ের মাঝে লুকিয়ে আছে। তাই জ্ঞানের রাজ্যে প্রবেশ করতে হলে বই পড়তেই হবে। নিজেকে জানতে হলে, পৃথিবীকে জানতে হলে বই পড়তে হবে। 

পৃথিবীর অন্যতম বহুভাষাবিদ জ্ঞানতাপস ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর একটি ঘটনা পড়লেই বুঝা যাবে বই পড়া আমাদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি প্রতিদিন কমপক্ষে ১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন। কারণ তিনি জানতেন বই পড়া ছাড়া কোনভাবেই জ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়।বই ছিল তার একমাত্র বন্ধু। বই ছিল তার নিত্যসঙ্গী। শহীদুল্লাহ একদিন পাঠাগারের এক কোনায় বসে বই পড়ছেন পড়ছেন তো পড়ছেনই, বইয়ের মাঝে ডুবে একাকার হয়ে আছেন। তিনি পাঠাগারের এক কোনায় বসে পড়তে থাকায় পাঠাগার কর্তৃপক্ষ পাঠাগার বন্ধ করার সময় হলে তাকে লক্ষ্য না করে পাঠাগার বন্ধ করে চলে গেলেন। কিন্তু শহীদুল্লাহ বিরামহীনভাবে পড়ছেন, কোন সময় পাঠাগার বন্ধ করা হলো তা তিনি টেরই পেলেন না।যত বড়ই বই হোক না কেন, শহীদুল্লাহ একবারে শেষ না করে কোনোভাবেই উঠতেন না। যা হোক পরদিন রীতিমত পাঠাগার খোলা হলো। খোলামাত্র পাঠাগার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে তিনি পড়লেন। কর্তৃপক্ষ তাকে দেখে তো হতবাক। শহীদুল্লাহকে তিনি প্রশ্ন করলেন, আপনি পুরো রাতদিন পাঠাগারে বন্দি ছিলেন? তখন শহীদুল্লাহর বই পড়ার ধ্যান ভেঙে গেল এবং মুখ খুলে বললেন অবচেতন মনে ‘না তো, আমি বই পড়ছিলাম।‘

সৈয়দ মুজতবার আলীর বই প্রীতির কথা আমরা সবাই জানি। তাইতো সহজেই তিনি বলতে পেড়েছেন, ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।‘ বই পড়ার গূঢ়ার্থ অনুধাবন করার নিমিত্তে তিনি তাঁর ‘বইকেনা’ গল্পে একজন রাজা ও হেকিমের গল্প বলেছিলেন।

“এক রাজা তাঁর হেকিমের একখানা বই কিছুতেই বাগাতে না পেরে তাঁকে খুন করেন। বই হস্তগত হল। রাজা বাহ্যজ্ঞান হারিয়ে বইখানা পড়ছেন। কিন্তু পাতায় পাতায় এমনি জুড়ে গিয়েছে যে, রাজা বার বার আঙুল দিয়ে মুখ থেকে থুথু নিয়ে জোড়া ছাড়িয়ে পাতা উল্টোচ্ছেন। এদিকে হেকিম আপন মৃত্যুর জন্য তৈরি ছিলেন বলে প্রতিশোধের ব্যবস্থাও করে গিয়েছিলেন। তিনি পাতায় পাতায় কোণের দিকে মাখিয়ে রেখেছিলেন মারাত্মক বিষ। রাজার আঙুল সেই বিষ মেখে নিয়ে যাচ্ছে মুখে।রাজাকে এই প্রতিহিংসার খবরটিও হেকিম রেখে গিয়েছিলেন কেতাবের শেষ পাতায়। সেইটে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজা বিষবাণের ঘায়ে ঢলে পড়লেন।“

একটা সভ্যতাকে, একটা শতাব্দীকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য মহা কোন পরিকল্পনা করার দরকার নেই। ঐ সভ্যতার সবগুলো বইও পুড়ে গেলার কোন প্রয়োজন নাই। শুধু মানুষকে বই পড়া থেকে বিরত রাখতে পারলেই তা হয়ে যাবে। তাই চলুন সবাই আমরা বই পড়ি আর প্রিয়জনকে বই উপহার দেই।

element 20

Meet Our Team

M H Masud, Founder and Writer of Gohinedola.com